|
মামলার তদন্তের নামে দফায় দফায় ঘুষ গ্রহণের ভয়াবহ তথ্য।
।
ঘুষ ছাড়া মামলার তদন্ত এগোয় না। ফলে সারাদেশে খুন, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, অপহরণ, গুম এবং ডাকাতিসহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধের বিপুলসংখ্যক মামলা বছরের পর বছর ধরে ঝুলে আছে। আসামিদের ধরতে বা চার্জশিট দেয়ার জন্য বিশেষ কারো তদবির না থাকলে নিজেদের দায়ের করা অস্ত্র-মাদকসহ অন্যান্য মামলার তদন্তেও গা করে না পুলিশ। এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনিটরে থাকা অধিকাংশ চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত চলে দায়সারা গতিতে। উৎকোচ বাণিজ্য না হওয়ায় সিআইডির তদন্তাধীন সহস্রাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলাও পড়ে আছে হিমাগারে।
।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঘুষ দিলেই তদন্তে ঝড়ের গতি; আর না দিলে মাসের পর মাস তা একই জায়গায় আটকে থাকছে। এমনকি আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্যও পুলিশকে টাকা দিতে হচ্ছে। চাহিদামতো ঘুষ না দিলে খুনসহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধের আসামিকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে আনা হলেও প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন না করেই জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। বাদীর কাছ থেকে আর্থিক ফায়দা না পেলে আসামির কাছ থেকে তা পুষিয়ে নিয়ে মামলার চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেয়ারও অসংখ্য নজির রয়েছে। আসামিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের উৎকোচ পেয়ে খোদ তদন্তকারী কর্মকর্তাই মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদীকে নানাভাবে চাপ দিয়েছেন_ এ ধরনের বিস্তর অভিযোগও রয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরে।
।
মামলার তদন্তের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে সময় বেঁধে দেয়া না থাকলেও ধারা ১৬৭(১) অনুযায়ী দফা (১)-এ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্তকাজ সমাপ্ত না হলে মামলার বিষয়ে পুলিশ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সে বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। যদিও ফৌজদারি কার্যবিধিতে যে সময়সীমার কথা বলা হয়েছে, তা উপদেশমূলক। কোনো আইনে উপদেশমূলকভাবে কোনোকিছু বিবৃত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা পালনে সচেষ্ট হতে হয়, তবে পালন করা না গেলে আইনের কোনো লঙ্ঘন হয় না। আর যদি কোনো আইনে আদেশমূলকভাবে কোনোকিছু নির্দেশ দেয়া হয়, তা আদেশ পালন না করা গেলে সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, তার উল্লেখ থাকে আদেশমূলক বিধানে। যদিও এরই মধ্যে ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে তদন্ত শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ সংক্রান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি অপরাধের সব মামলার তদন্ত ৬০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। যদি এ সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব না হয়, তাহলে আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সময় আরো ৩০ দিন বাড়ানো যাবে। আর যদি তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা বদল হন, তাহলেও তিনি আরো ৬০ দিন সময় পাবেন। এতে করে একটি মামলা তদন্তের জন্য সর্বমোট সময় পাওয়া যাবে ১৫০ দিন। খসড়ায় বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে না পারলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
।
তদন্তটা থানা পুলিশের জন্য এখন ব্যবসা হয়ে গেছে। ইচ্ছা করেই অনেক মামলার তদন্ত দীর্ঘায়িত করা হয়। এমন অনেক মামলা আছে, যেগুলোয় তদন্তকারী কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলেই যান না।
Categories: __________Chapter-III
The words you entered did not match the given text. Please try again.
If you are the site owner, please renew your premium subscription or contact support.
Oops!
Oops, you forgot something.