|
আইজি নির্বাচনে যোগ্য লোক সমাজ পরিবর্তন করে দিতে পারে।
।
পত্রিকায় দেখলাম এক ডিআইজির ছেলেকে এক এস আই ধরে নিয়ে গেছে থানায়। ডিআইজির স্ত্রী ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। পরে অবশ্য ঘটনা জানাজানি হবার পর এস আইকে ক্লোজ করা হয়। অন্য এক ঘটনার কথা লিখেছে প্রথম আলো সহ আরো কয়েকটি পত্রিকা। এবারও এক এস আই। পরকীয়া করে বেড়ায় অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে । কুলটা স্ত্রীর হতভাগ্য স্বামী মৃদু আপত্তি করায় এস আইটি সেই স্বামী বেচারার পায়ে গুলি করে তাকে সন্ত্রাসী মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। সালাউদ্দিন নামের এক ওসির কুকর্ম দেখাচ্ছে কয়েকটি চ্যানেলে। বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে সে নাকি লোকজনকে থানায় ধরে আনে এবং মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে। আমি এক ওসিকে চিনি। সে তার থানা এলাকায় এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে ৩/৪ জন সন্ত্রাসীকে। এসব সন্ত্রাসীরা ১২/১৪ টি হোন্ডা নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ব্যবসায়ী, ধনাঢ্য লোকজন এবং প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে গন্ডগোল শুরু করে। ওসি তার দলবল নিয়ে কাছাকাছি লুকিয়ে থাকে । তারপর ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে টার্গেট লোককে নিয়ে যায় থানায়। মোটা অংকের টাকা দিলে ছেড়ে দেয়া হয়। আর টাকা না পেলে ৩/৪ মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
.
মাঠ পর্যায়ের পুলিশের বাড়াবাড়ি এবং দূর্বৃত্তপনার বিষয়ে প্রতিকার পাওয়া তো দুরের কথা অভিযোগ শোনার কোন লোক নেই। কেউ যদি দয়া করে শোনেনও কিন্তু ব্যবস্থা গ্রহনের কোন ক্ষমতা রাখেন না। একজন সম্মানীত রাজনৈতিক নেতা তার এলাকার ওসির বিষয়ে অভিযোগ দেবার জন্য এসপির কাছে ফোন করলেন। ২/৩ ঘন্টা ধরে কয়েকশবার চেষ্টা করার পরও এসপি ফোন ধরলেন না। এরপর ভদ্রলোক ভয়ে ভয়ে ডিআইজির কাছে ফোন করলেন। ডিআইজি বেশ সম্মান ও তাজিম সহকারে নেতা ভদ্রলোকের ফোনটি রিসিভ করলেন এবং এ কথা শুনে খুবই আশ্চর্য হলেন যে গত ২/৩ ঘন্টা এক নাগাড়ে ফোন করার পরও এসপি ফোন ধরেননি। তিনি ফোনকারী নেতার নিকট নিজের বীরত্ব জাহির করতে গিয়ে বললেন-স্যার! কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন আমি এখনই এসপিকে বলছি। এত্তোবড় সাহস! ও আপনার ফোন ধরে না। দাঁড়ান দেখাচ্ছি মজা । ও ই আপনাকে ফোন ব্যাক করবে। নেতা মনের আনন্দে সিগারেট ধরালেন। প্রায় ৩০ মিনিট চলে গেলো- এসপি ফোন করে না। এরপর নেতা নিজেই আবার বেহায়ার মতো ফোন দিলেন। এবারও এসপি সাহেব ধরলেন না। নেতা মনের দুঃখে ঠোঁট কামড়াতে কামড়াতে ডি আইজিকে আবার ফোন দিলো। ডি আইজি বললেন- স্যার আমি তো চেষ্টা করলাম ! ও যে কেনো আপনার ফোন ধরছে না তার আগামাথা কিছুই বুঝছিনা। আমি দুঃখিত! দ্যাখেন স্যার! আমি একজন ডিআইজি হয়ে আপনার ফোন ধরি অথচ . . . . . জাদা আপনার মতো সম্মানীত মানুষের ফোনই রিসিভ করেনা। দেশটার হলো কি ? মান সম্মান বোধ কি উঠে গেলো নাকি . . . .।
আমার পরিচিত নেতাটি বেশ প্রভাবশালী এবং সারা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অত্যন্ত পরিচিত নাম। তিনি বিষয়টি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা এবং মন্ত্রনালয়ে আলাপ করলেন। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কথাবার্তা শুনে তিনি আরো হতাশ হলেন। সবারই একই কথা - আর কয়টা দিন অপেক্ষা করুন। নতুন ডিআইজি নিয়োগ হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি ভদ্রলোকের কথা শোনার পর আশ্চর্য হলাম না। কারন পুলিশের বর্তমান সমস্যা নিয়ে কমবেশী আমারও কিছু জানা শোনা আছে। মাঠ পর্যায়ের সমস্যা দিনকে দিন জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। অন্যদিকে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রায় সকল সদস্যই অপেক্ষা করছে নতুন আইজির মনোনয়নের জন্য। কিন্তু কে হতে যাচ্ছে নতুন আইজি!
.
কে কখন কবে আইজি হবেন- আজকের লেখার প্রতিপাদ্য কিন্তু সেটা নয়। আজকের বিষয়বস্তু ছিলো পুলিশে অস্থিরতা এবং স্থবিরতার প্রসঙ্গ। সেই ২০০৯ সাল থেকে আজ অবধি বিভিন্ন পরিস্থিতি এবং প্রেক্ষাপটের কারনে পুলিশ বাহিনী নানাবিধ সমস্যার জালে আটকা পড়ে গেছে। এসব সমস্যা বাড়তে বাড়তে একদম আইজি পর্যন্ত এসে ঠেকেছে। এই অবস্থায় একজন দক্ষ এবং যোগ্য আইজি নিয়োগ দিয়ে বুলেট আকারে- বাহিনীটির সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের ব্যবস্থা না করলে সরকার এক মারাত্মক বিপদে পড়বে।
Categories: Open Mind
The words you entered did not match the given text. Please try again.
If you are the site owner, please renew your premium subscription or contact support.
Oops!
Oops, you forgot something.