|
জামাত-শিবিরই বড় নাস্তিক – প্রমাণিত
.
মতিউর রহমান নিজামী এবং তার দল জামায়াতে ইসলামী ইসলাম কায়েমের কথা বলে থাকে। তারা যখন-তখন ইসলামের দোহাই দেয় এবং নিজেদের ইসলামের সাচ্চা অনুসারী দাবি করে। দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে তারা 'বিধর্মী ও নাস্তিক' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু তারা নিজেরাই কখনও ইসলামের আদর্শ ও বিধিবিধান অনুসরণে আন্তরিক নয়। এর অনেক প্রমাণ আমরা উপস্থাপন করতে পারি। গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামী ইসলামের নাম নিয়ে রাজনীতি করেন। তাদের দলের নাম জামায়াতে ইসলামী। ইসলাম পবিত্র ধর্ম। একটি দলের নামের সঙ্গে এই শব্দ জুড়ে দেওয়া অনুচিত। এটা তারা জেনেবুঝেই করেছে। তারা চায় জনগণকে বিভ্রান্ত করতে। ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। উদার ও পরমতসহিষ্ণুতা শেখায় এ ধর্ম। এ ধর্ম থেকে পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের নির্দেশনা মেলে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ধর্মের নামে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। হানাহানি ও সংঘাত সৃষ্টির প্ররোচনা দেয়। তারা ইসলামের নামে একটি অশান্তির মডেল তুলে ধরছে। এর ফলে শুধু আমাদের দেশে নয়, অন্য দেশের মানুষের মধ্যেও এ ধর্ম সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।
.
দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে মানবতাবিরোধী অপরাধ। আমাদের পবিত্র ধর্ম কেবল এ ধর্মে বিশ্বাস স্থাপনকারীদের জন্য নয়, গোটা মানবজাতিকেই মুক্তির পথ দেখায়। আমাদের ধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহাম্মদ (সা.) মানবিক মূল্যবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক ও উদার মনের মানুষ। তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সর্বকালের সব মানুষের জন্য অনুসরণীয়। পরমতসহিষ্ণু ছিলেন তিনি। মদিনা সনদ ও বিদায় হজের বাণী মানবজাতির জন্য অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়।
.
তৃতীয়ত, জামায়াতে ইসলামী ইসলামের নামে রাজনীতি করে বলে দাবি করে। কিন্তু আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন বলেছে, কেউ যদি একজন মানুষকেও হত্যা করে, সে যেন পুরো মানবজাতিকে হত্যা করেছে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা এক বা দু'জনকে নয়, অগণিত নারী-পুরুষ-শিশুকে হত্যা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে সংশ্লিষ্ট থাকার অজস্র অভিযোগ। দিনের পর দিন তারা হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। এরা সবাই ছিল নিরপরাধ। একই সঙ্গে তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকেও গণহত্যায় সহযোগিতা করেছে। তারা লুণ্ঠন ও ধর্ষণের মতো অপরাধেও অভিযুক্ত। তাদের কর্মকাণ্ড ইসলামের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ গুরুতর অপরাধের জন্য তাদের মধ্যে কোনো অনুতাপ ও অনুশোচনাবোধও নেই। তারা কখনও দেশবাসীর কাছে এ জন্য ক্ষমা চায়নি। এখনও তারা যে রাজনীতি করছে, সেখানেও তারা হানাহানি-বিভেদকে উস্কে দিচ্ছে।
.
চতুর্থত, তারা যে অপরাধ করেছে, সে জন্য বিচারের সম্মুখীন হতেই হতো। অনেক দিন নানাবিধ কারণে বিচার বিলম্বিত হয়েছে। প্রচলিত আইনে তাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু যে ধর্মীয় আদর্শের কথা তারা জোর গলায় বলে থাকে, তার মানদণ্ডেও বিচার এড়ানোর কোনো সুযোগ তাদের নেই।
.
ইসলাম ধর্মের বিধানে বলা আছে, একজন মানুষ অন্য কোনো মানুষের যতটা ক্ষতি করবে, ঠিক ততটা শাস্তি তার প্রাপ্য। এটাকে কিসাস বলা হয়। হাতের বদলে হাত, চোখের বদলে চোখ এবং প্রাণের বদলে প্রাণ। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা ১৯৭১ সালে কত লোকের জীবন নিয়েছে, তার হিসাব করা কঠিন। তারা খুন করেছে প্রকাশ্যে। হাত-পা কেটে ফেলা নয়, যাকে খুশি তাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। এমনকি শিশুদেরও তারা নৃশংসভাবে খুন করেছে। তাদের অনেক নেতাকর্মী প্রত্যেকেই অনেক মানুষকে হত্যা করেছে। এর বিচার করার বিধান ধর্মেই বলা আছে। আমাদের দেশের বিদ্যমান আইনেও তার নির্দেশনা রয়েছে। এ থেকে নিষ্কৃতি লাভের কোনো সুযোগ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের নেই।
.
ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন
সহযোগী অধ্যাপক, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Categories: Open Mind
The words you entered did not match the given text. Please try again.
If you are the site owner, please renew your premium subscription or contact support.
Oops!
Oops, you forgot something.