|
লোকবল নিয়োগ দিলেই ভাগ কমে যাবে – নিয়োগের দরকার নাই
।
২৪ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে সরকার। ওই কমিটিকে সরকারের শূন্য পদ পূরণ, আবশ্যকীয় নতুন পদ সৃজন এবং এসব পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়। অথচ ওই কমিটি দুইবার তাগাদাপত্র দেয়ার পরও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর যথেষ্ট সাড়া মেলেনি। ফলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে শূন্য ২ লাখ ২৮ হাজার ২৫৬টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া আগের মতোই থমকে আছে।
ভূমি প্রশাসন : প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় সবচেয়ে বেশি অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে এই প্রশাসনে। জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি), কানুনগো এবং সার্ভেয়ার পদের অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৯২। কর্মরত আছেন ২ হাজার ২৪৩ জন। আর পদ শূন্য রয়েছে ১ হাজার ৪৪৯টি। অর্থাৎ, অনুমোদিত পদের ৩৯ শতাংশই শূন্য।
অথচ ৮ বছর আগে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও এখন পর্যন্ত মৌখিকের ডাক পাননি কানুনগো পদের ১২ হাজার চাকরিপ্রত্যাশী।
.
বাংলাদেশ রেলওয়ে : লোকবল সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশ রেলওয়ের সাড়ে ৪ হাজার একর জমি বেদখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে শুধু চট্টগ্রাম অঞ্চলেরই প্রায় ৫২৬ একর জমিতে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছে। দখল হয়ে যাওয়া এই জমির মূল্য বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি বলে জানা গেছে। রেলওয়ের হিসাব মতে, এসব জমিতে গড়ে ওঠা ১০ হাজার ৩৬১টি বস্তিতে অবৈধ দখলদারের রয়েছে ১৩ হাজার ৩৩১ জন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের দাবি, লোকবল সঙ্কটের কারণে দখল হয়ে যাওয়া এই বিশাল ভূমি উদ্ধার করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বেদখলের নানা রকম তথ্য অনুসন্ধানে ভিন্ন চিত্র বেরিয়ে এসেছে। জানা গেছে, অধিকাংশ দখলদারের কাছ থেকে রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিয়মিত আর্থিক সুবিধা ভোগ করছেন। আর এই অপকর্ম সহজতর করতে তারা সব সময়ই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সহায়তা নিচ্ছেন। দখলদার চক্রের নেপথ্য মদদদাতা হিসেবে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনেকের নাম বেরিয়ে এসেছে।
।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর : সারাদেশে মাদকদ্রব্য সহজলভ্য পণ্যে পরিণত হলেও এর তদারকি প্রতিষ্ঠান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পুরোপুরি বেহাল দশা। জনবল সঙ্কট, মাদকদ্রব্য উদ্ধারে কৌশলের অভাব এবং প্রশিক্ষিত জনবল না থাকায় তারা মাদক নির্মূলে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না বলে এই প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয় : এই মন্ত্রণালয়ের আবাসন পরিদপ্তরের বাড়ি ও ফ্ল্যাট মিলিয়ে ৫১টি সরকারি সম্পত্তিতে অবৈধ দখলদাররা বছরের পর বছর বসবাস করে আসছেন। সরকারের খাতায় তাদের অবৈধ দখলদার এবং বসবাসকারী হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এ ব্যাপারে দায়েরকৃত মামলা নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। সংশ্লিষ্ট আইন বিভাগ মামলা পরিচালনা করছে, কিন্তু এর ভবিষ্যৎ কী_ এ সম্পর্কে কিছু বলতে পারছে না। এমনকি কোনো কোনো মামলার নথিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আবাসন পরিদপ্তরের একটি সংঘবদ্ধ চক্র এবং লিগ্যাল উইংয়ের দীর্ঘসূত্রতার কারণে সরকারের এসব শতকোটি টাকার সম্পত্তি অন্যের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আবাসন পরিদপ্তরের পরিত্যক্ত বাড়ি শাখা সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরে পূর্ণাঙ্গ বাড়ির সংখ্যা ১০টি, ফ্ল্যাট ২৫টি; ধানম-িতে পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ৪টি, ফ্ল্যাট ২টি এবং লালমাটিয়ায় পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ৩টি। এছাড়া মনিপুরীপাড়ায় পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ১টি, নাখালপাড়ায় ১টি, আজিমপুরে ১টি, নয়া পল্টনে ১টি, মগবাজারে ১টি এবং এলিফ্যান্ট রোডে ১টিসহ মোট ৫১টি বাড়ি ও ফ্ল্যাট নিয়ে বিভিন্ন আদালতে মামলা চলছে। মামলাগুলো ১৯৮৫ সাল থেকে শুরু করে চলতি বছরের মধ্যে দায়ের করা হয়েছে। এই সমস্যার সমাধান না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইন বিভাগের লোকবল সঙ্কটের দোহাই দিলেও খোঁজ নিয়ে ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, আবাসন অধিদপ্তরের একটি চক্রের কারণেই সরকারের সম্পত্তি বেহাত হতে চলেছে। তাদের অনেকেই দখলদার চক্রের কাছ থেকে এককালীন আর্থিক সুবিধার বাইরে মাসোহারাও গ্রহণ করছে।
।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড : জানা গেছে, ছোট-বড় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই রাজস্ব বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের গোপন যোগসাজশ রয়েছে। সেখান থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা নিয়মিত মাসোহারা তুলছেন। বিশেষ করে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিক্রীত পণ্যের ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য, সেসব প্রতিষ্ঠানের মাঠ কর্মকর্তারা নিয়মিত অবৈধ আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। এ কারণে ভ্যাট আদায়ে রাজস্ব বোর্ড কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পেঁৗছতে ব্যর্থ হচ্ছে।
Categories: Open Mind
The words you entered did not match the given text. Please try again.
If you are the site owner, please renew your premium subscription or contact support.
Oops!
Oops, you forgot something.