Nipun Services
  Toronto, Ontario, Canada
  A  House of  Quality & Trust

  Nipun  Services

  Provide accurate services

News and Views Post New Entry

Kh. Alam

Posted by Nipunservices on September 26, 2014 at 8:15 AM

একাডেমিক জীবনের বাইরের শিক্ষাই অনেক সময় প্রকৃত শিক্ষা।
.

অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের মতো কয়েকজন উজান স্রোতের যাত্রী মিহি গলায় বলতে থাকেন, সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে, মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন হচ্ছে না আর কোয়ালিটি এডুকেশন বলতেও কিছু থাকছে না। ফল ভালো করে বের হচ্ছে যারা, তারা আদৌ কিছু শিখছে কি? একই প্রশ্ন সর্বত্র। স্কুলে যাচ্ছে বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশের বেশি ছেলেমেয়ে, তারা শিখছেটা কী? প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাস করে বের হওয়া ছেলেমেয়েকে দেখা যাচ্ছে বাংলা পড়তে পারে না, লিখতে পারে না, অঙ্ক পারে না, ইংরেজির কথা নাহয় না-ই বা হলো।
.
আমরা জেনে গেছি, এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় ৮০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাসই করতে পারেনি। এটা কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতার কথা হচ্ছে না। কারণ, পরীক্ষাটা প্রতিযোগিতামূলক, সবাই ভালো করলেও সবাইকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব হবে না কোনোভাবেই, হচ্ছে পরীক্ষায় ন্যূনতম একটা পাস মার্কস অর্জনের কথা। ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল বিপর্যয় আরও মারাত্মক, ১০ জনের নয়জনই ফেল। পাস করেছে মাত্র একজন। অথচ এই ছেলেমেয়েদের বেশির ভাগই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ–৫ পেয়েছে।
.
লেখাপড়া শহরকেন্দ্রিক হয়ে গেছে এবং হয়ে গেছে বাণিজ্যকেন্দ্রিক। কোচিং আর প্রাইভেট টিউটরের ব্যবসা চলছে। কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। এই টিউটরদের হাত থেকে, কোচিং ব্যবসা থেকে বাঁচতে শিক্ষাবিদেরা নতুন পদ্ধতির প্রবর্তন করলেন। সৃজনশীল পদ্ধতি। যাতে শিক্ষার্থীদের মুখস্থ করতে না হয়, যাতে তাদের কোচিং সেন্টারে যেতে না হয়, টিউটরের মুখাপেক্ষী হতে না হয়। কর্তারা আর কতটা সৃজনশীল! আমাদের কোচিং সেন্টার এবং কোনো কোনো শিক্ষক তার চেয়েও সৃজনশীল। ছাত্রছাত্রীদের কাছে সৃজনশীল পদ্ধতিটাকে তারা এক বিভীষিকা হিসেবে হাজির করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রশ্ন কী হবে আর সেটার উত্তর কী হবে, সেটা কেবল জানি আমি। কাজেই আমার কাছে পড়তে এসো। শিক্ষক কিংবা কোচিং ক্লাস যেভাবে উত্তর লেখা শেখাবে, হুবহু সেটাই পরীক্ষার খাতায় উগরে আসতে হবে, তা না হলে সৃজনশীলে তুমি পাবে গোল্লা।
.
আছে মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। প্রথম দিকে করা হলো প্রশ্নব্যাংক। ৫০০ প্রশ্ন আগে থেকেই দেওয়া থাকে। ছেলেমেয়েরা উত্তর শিখে যায়। জিপিএ ফাইভের প্রাচুর্যের সেই শুরু। তারপর প্রশ্নব্যাংক তুলে দেওয়া হলো। শিক্ষার্থীরা পথে নামল, ভাঙচুর করল। এখন প্রশ্নব্যাংক নেই, তবে এমসিকিউ আছে। কৌতুক প্রচলিত আছে, জিজ্ঞেস করা হলো, তোমার বাবার নাম কী? ছেলে বলে, আপনি চারটা নাম বলুন, অপশন দিন, আমি টিক দিয়ে দিচ্ছি।
গোদের ওপর বিষফোড়া।
.
প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়াকে যদি আমরা চলতে দিই, সামনের বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ৫ শতাংশও পাস করতে পারবে না। কারণ, সারা বছর ছেলেমেয়েরা পড়বে না। পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র খুঁজে ফিরবে। সত্য হোক, মিথ্যা হোক, কিছু একটা তারা হাতে পাবেই। সেটা শিখে যাবে, যদি মেলে তাহলে জিপিএ ফাইভ, না মিললে ফেল। কিন্তু কেন কষ্ট করে সারাটা বছর তারা পড়াশোনা করবে?
.
আসল কথা হলো, যোগ্যতা অর্জন, নিজের গুণগুলোকে প্রকাশ করা, মানুষের মতো মানুষ হওয়া, দেশের জন্য, সভ্যতার জন্য কিছু করা। আমাদের শিক্ষার্থীদের বলব, তোমরা হতাশ হয়ো না। তোমরা নিজে থেকেই পড়ো। জানার চেষ্টা করো। মানুষ হওয়ার চেষ্টা করো।প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পেয়ে তোমরা নোবেল জয়ী গবেষক হও, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-শিক্ষক হও, ব্যবসায়ী হও, না পেলেও দুশ্চিন্তা কোরো না, সারাটা জীবনই শেখা যায়, পড়া যায়, একাডেমিক জীবনের বাইরের শিক্ষাই অনেক সময় প্রকৃত শিক্ষা।
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।

.

একাডেমিক জীবনের বাইরের শিক্ষাই অনেক সময় প্রকৃত শিক্ষা।

.

অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের মতো কয়েকজন উজান স্রোতের যাত্রী মিহি গলায় বলতে থাকেন, সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে, মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন হচ্ছে না আর কোয়ালিটি এডুকেশন বলতেও কিছু থাকছে না। ফল ভালো করে বের হচ্ছে যারা, তারা আদৌ কিছু শিখছে কি? একই প্রশ্ন সর্বত্র। স্কুলে যাচ্ছে বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশের বেশি ছেলেমেয়ে, তারা শিখছেটা কী? প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাস করে বের হওয়া ছেলেমেয়েকে দেখা যাচ্ছে বাংলা পড়তে পারে না, লিখতে পারে না, অঙ্ক পারে না, ইংরেজির কথা নাহয় না-ই বা হলো।

.

আমরা জেনে গেছি, এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় ৮০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাসই করতে পারেনি। এটা কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতার কথা হচ্ছে না। কারণ, পরীক্ষাটা প্রতিযোগিতামূলক, সবাই ভালো করলেও সবাইকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব হবে না কোনোভাবেই, হচ্ছে পরীক্ষায় ন্যূনতম একটা পাস মার্কস অর্জনের কথা। ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল বিপর্যয় আরও মারাত্মক, ১০ জনের নয়জনই ফেল। পাস করেছে মাত্র একজন। অথচ এই ছেলেমেয়েদের বেশির ভাগই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ–৫ পেয়েছে।

.

লেখাপড়া শহরকেন্দ্রিক হয়ে গেছে এবং হয়ে গেছে বাণিজ্যকেন্দ্রিক। কোচিং আর প্রাইভেট টিউটরের ব্যবসা চলছে। কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। এই টিউটরদের হাত থেকে, কোচিং ব্যবসা থেকে বাঁচতে শিক্ষাবিদেরা নতুন পদ্ধতির প্রবর্তন করলেন। সৃজনশীল পদ্ধতি। যাতে শিক্ষার্থীদের মুখস্থ করতে না হয়, যাতে তাদের কোচিং সেন্টারে যেতে না হয়, টিউটরের মুখাপেক্ষী হতে না হয়। কর্তারা আর কতটা সৃজনশীল! আমাদের কোচিং সেন্টার এবং কোনো কোনো শিক্ষক তার চেয়েও সৃজনশীল। ছাত্রছাত্রীদের কাছে সৃজনশীল পদ্ধতিটাকে তারা এক বিভীষিকা হিসেবে হাজির করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রশ্ন কী হবে আর সেটার উত্তর কী হবে, সেটা কেবল জানি আমি। কাজেই আমার কাছে পড়তে এসো। শিক্ষক কিংবা কোচিং ক্লাস যেভাবে উত্তর লেখা শেখাবে, হুবহু সেটাই পরীক্ষার খাতায় উগরে আসতে হবে, তা না হলে সৃজনশীলে তুমি পাবে গোল্লা।

.

আছে মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। প্রথম দিকে করা হলো প্রশ্নব্যাংক। ৫০০ প্রশ্ন আগে থেকেই দেওয়া থাকে। ছেলেমেয়েরা উত্তর শিখে যায়। জিপিএ ফাইভের প্রাচুর্যের সেই শুরু। তারপর প্রশ্নব্যাংক তুলে দেওয়া হলো। শিক্ষার্থীরা পথে নামল, ভাঙচুর করল। এখন প্রশ্নব্যাংক নেই, তবে এমসিকিউ আছে। কৌতুক প্রচলিত আছে, জিজ্ঞেস করা হলো, তোমার বাবার নাম কী? ছেলে বলে, আপনি চারটা নাম বলুন, অপশন দিন, আমি টিক দিয়ে দিচ্ছি।

গোদের ওপর বিষফোড়া।

.

প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়াকে যদি আমরা চলতে দিই, সামনের বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ৫ শতাংশও পাস করতে পারবে না। কারণ, সারা বছর ছেলেমেয়েরা পড়বে না। পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র খুঁজে ফিরবে। সত্য হোক, মিথ্যা হোক, কিছু একটা তারা হাতে পাবেই। সেটা শিখে যাবে, যদি মেলে তাহলে জিপিএ ফাইভ, না মিললে ফেল। কিন্তু কেন কষ্ট করে সারাটা বছর তারা পড়াশোনা করবে?

.

আসল কথা হলো, যোগ্যতা অর্জন, নিজের গুণগুলোকে প্রকাশ করা, মানুষের মতো মানুষ হওয়া, দেশের জন্য, সভ্যতার জন্য কিছু করা। আমাদের শিক্ষার্থীদের বলব, তোমরা হতাশ হয়ো না। তোমরা নিজে থেকেই পড়ো। জানার চেষ্টা করো। মানুষ হওয়ার চেষ্টা করো।প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পেয়ে তোমরা নোবেল জয়ী গবেষক হও, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-শিক্ষক হও, ব্যবসায়ী হও, না পেলেও দুশ্চিন্তা কোরো না, সারাটা জীবনই শেখা যায়, পড়া যায়, একাডেমিক জীবনের বাইরের শিক্ষাই অনেক সময় প্রকৃত শিক্ষা।

আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।

Categories: Open Mind

Post a Comment

Oops!

Oops, you forgot something.

Oops!

The words you entered did not match the given text. Please try again.

Already a member? Sign In

1 Comment

Reply Ukfmef
11:51 PM on June 25, 2022 
brand imitrex 50mg - sumatriptan 50mg brand order imitrex generic

Oops! This site has expired.

If you are the site owner, please renew your premium subscription or contact support.