|
![]() |
.
শুক্রাণুই হছে প্রথম জীবনশক্তি
।
পুরুষের শুক্রাণুই হছে প্রথম জীবনশক্তি কারন মিলনের পরে এই শুক্রাণুই সাঁতার কেটে কেটে ডিম্বাণুর কাছে যায় যেখানে ডিম্বাণু থাকে স্থির এক ফুলের গুচ্ছর মতন। শুক্রাণুর প্রথম খাদ্য বা নিষেক থেকে শুরু হয় প্রথম ধাপ। এর পরের পরিবর্তনের ধাপে ধাপে এক নতুন শিশুর রূপান্তর ঘটে। ফলে দেখা যাচ্ছে জীবনের শুরু ঐ শুক্রাণু নয় ডিম্বাণু। সন্তানটি মেয়ে না ছেলে হবে তা নির্ভর করবে ডিম্বাণুর নিষেকের উপরে।
|
![]() |
.
"আমি সমস্ত ভারতবর্ষ ভ্রমণ করিয়া একজন ভিক্ষুক বা তস্কর দেখিলাম না। এত বিপুল সম্পদশালী এই দেশ।
.
ব্যক্তিমানুষের বিবেক জ্ঞান মনন এত উন্নত! সাংস্কৃতিক এবং আদর্শিক ঐতিহ্য, এই মেরুদণ্ড ভঙ্গ না করিলে আমার ধারনা এই জাতিকে পদানত করা সম্ভব নহে।
.
আমার প্রস্তাব এই দেশের প্রাচীন শিক্ষাব্যবস্থা, ইহার সংস্কৃতিকে এমনভাবে পরিবর্তন করা হউক যাহাতে ভারতীয় বিশ্বাস করে যাহা কিছু ইংরাজ ও বিদেশী তাহাই উত্তম।
.
ইহাতে তাহারা তাহাদের জাত্যভিমান হারাইবে, তাহাদের উৎকর্ষতা হারাইবে এবং আমরা যাহা চাই তাহাই হইবে - একটি পরাধীন জাতি।" - লর্ড ম্যাকালয় ব্রিটিশ সংসদের ভাষণ এর একাংশ, ২রা ফেব্রুয়ারি ১৮৩৫
.
কৃতজ্ঞতা ও অনুবাদঃ Shamiul Haque Sami
|
![]() |
শুক্রাণুরই জীবন থাকে প্রথমে যার প্রথম খাদ্য হয় ডিম্বাণু । শুক্রাণুর দ্যোর শুরু হয় প্রথম থেকেই যেখানে ডিম্বাণু থাকে স্থির। নারী খালি বহন করে শুক্রানুর নতুন জীবন। শুক্রাণু তথা পুরুষের মাধমেই আল্লাহর তরফ থেকে জীবনের সুত্রপাত শুরু হয় প্রথমে, নারী তার প্রথম বাহক।
|
![]() |
.
৩১ বিধবা বেঁচে আছে আল্লাহর সাক্ষী হিসাবে।
।
একাত্তরের ২৫ জুলাই আলবদর, রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনী নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল সোহাগপুর গ্রামে। বেনুপাড়ার সব পুরুষকে (১৮৭ জন) হত্যা করে পাড়াটিকে পরিণত করা হয়েছিল বিধবাপল্লিতে। ওই দিন যে ৫৭ জন বিধবা হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে বর্তমানে হাফিজাসহ ৩১ জন বেঁচে আছেন।
।
স্বামী হারানো বিধবা হাছেন বানু বলেন, ‘সাক্ষী দিউনের পর থাইকা এলাকার লোকজন ডর দেহাইতো। সরকার বইদলা (পরিবর্তন) গেলে নাহি আমগর উল্ডা বিচার করব। এর লাইগা সবসুমু ভয়ে ভয়ে থাকতাম। ফাঁসির রায় বহাল অইছে হুন্না আমগর মনে স্বস্তি ফিইরা আইছে।
।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ার পর থাইকা রাইতে ঠিকমতো ঘুমাইবার পাইতাম না। গত বছর যহন মৃত্যুদণ্ড রায় অয়, তহন আমরা বিরাট খুশি অইছিলাম, কিন্তু হিবার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পর থাইকা মনের মধ্যে সবসুমু একটা দুশ্চিন্তা কাম করতো। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড বহাল থাহুনে হেই ডরডা কাইটা গেছে।’শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের বিধবাপল্লির বিধবা হাফিজা বেওয়ার (৭০) কথা এগুলো। আজ সোমবার একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় বহাল রাখার ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
।
স্বামী-স্বজনহারা বিধবা করফুলি বেওয়া বলেন, ‘এই দিনটার অপেক্ষায় আল্লাহ আমগরে বাঁচাইয়া রাখছে। আমগর স্বামী-সন্তানদের যে ভাবে মারছে, তার বিচার অইছে, অহন ফাঁসি কার্যকর দেখবার চাই।’
|
![]() |
.
বলুন আলহামদুলিল্লাহ্ - কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড
।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
.
এর আগে এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃত্যুদণ্ড দিলে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলর করেন কামারুজ্জামান। ২০১৩ সালের ৯ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। তার বিরুদ্ধে গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, লুটপাটসহ প্রসিকিউশনের আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয় ট্রাইব্যুনাল।
|
![]() |
.
আমি হচ্ছি বাঙালি খান, বানাবো তোদের পাকিস্তান
.............................................................
মীর কাসেমের বিরুদ্ধে ১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর যেকোনো দিন মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে চট্টগ্রাম শহরের অজ্ঞাত স্থান থেকে অপহরণ করে আলবদর সদস্যরা। পরে মীর কাসেমের নির্দেশে জসিমকে ডালিম হোটেলে নির্যাতন কেন্দ্রে নিয়ে নির্যাতন ও ২৮ নভেম্বর হত্যা করা হয়। পরে সেখানে নির্যাতনে নিহত আরও পাঁচজনের সঙ্গে জসিমের লাশ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
.
১২ নম্বর অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের নভেম্বরে মীর কাসেমের নির্দেশে আলবদর সদস্যরা চট্টগ্রামের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা হাজারী গলির বাসা থেকে রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। এ ছাড়া পাকিস্তানি সেনা ও সহযোগী রাজাকার-আলবদররা হাজারী গলির ২৫০ থেকে ৩০০ দোকান লুট ও অগ্নিসংযোগ করে।
।
মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামে আলবদর বাহিনীর প্রধান মীর কাশেম আলী মুক্তিকামী মানুষদের ধরে এনে নির্যাতনের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পাঁচটি টর্চারসেল। মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ সমর্থনকারীদের ধরে এনে এ সব কেন্দ্রে অমানুষিক নির্যাতন করত মীর কাশেম আলীর নেতৃত্বে আলবদর বাহিনীর পাষন্ডরা। নগরীর ওল্ড টেলিগ্রাফ রোডসংলগ্ন মহামায়া ভবন, যা ডালিম হোটেল নামে পরিচিত-এটি ছিল আলবদর বাহিনীর সকল অপকর্মের হেডকোয়ার্টার। এখানেই মীর কাশেম আলী বাঙালী খান হিসেবে আবির্ভূত হতেন স্বাধীনতাকামী বাঙালীদের কাছে। এখানে নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। কেউ হয়েছেন পঙ্গু। কাউকে করা হয়েছে জীবনমৃত। রবিবার আন্তর্জাতিক মানবতা-বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মীর কাশেম আলীকে যে অপরাধে ফাঁসি দেয়া হয়েছে সেগুলো ডালিম হোটেলকেন্দ্রিক হত্যা ও নির্যাতনকে কেন্দ্র করে। সঙ্গতকারণে বাংলাদেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়ের যে অধ্যায় সূচিত হয়েছে তার সঙ্গে ইতিহাস হয়ে থাকবে এই ডালিম হোটেল।
|
![]() |
.
শোকাবহ জেলহত্যা দিবস – কত রক্তের এই বাংলাদেশ ?
।
আজ ৩ নভেম্বর। জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের সিপাহশালার ও সংগঠক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাতীয় জ্যোতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এএইচএম কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করার পর এই চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এএইচএম কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয়। ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকা-ের পর তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সেলের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রী সভার সবচাইতে ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক সদস্য হিসেবে পরিচিত এবং তৎকালীন স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোস্তাক আহমদের প্ররোচনায় এক শ্রেণীর উচ্চাভিলাসী মধ্যম সারির জুনিয়র সেনা কর্মকর্তারা এ নির্মম হত্যাকা- ঘটায়। দেশের এই চার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে ১৫ আগস্টের হত্যাকা-ের পর কারাগারে পাঠিয়ে খুনিচক্র কারাগারে ঢুকে প্রথমে গুলি এবং পরে বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। জাতীয় এ চার নেতা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার হাতে আটক বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন।
|
![]() |
"... ধনতান্ত্রিক সমাজে টাকাই গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে। টাকার স্বার্থ বিঘ্নিত হলে টাকার মালিক গণতন্ত্রের টুটি চেপে ধরে। তাই সেকালে বাঙালির অধিকার আদায়ের যে কোন আন্দোলনই পশ্চিম পাকিস্তানি ধনবানদের টাকার স্বার্থ ক্ষুন্ন করার আন্দোলন হিসেবেই জন্ম নিয়েছে। চিত্রিত হয়েছে পূর্ব পাকিস্তান বনাম পশ্চিম পাকিস্তান আন্দোলন হিসেবে। এই বঞ্চনা ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার অবদান। এ বঞ্চনা শেষ হতে পারে ধনবাদী সমাজ পাল্টাবার মধ্য দিয়ে। সেদিক থেকে ১৯৭১ সালের সংগ্রামে সকলের আগ্রহ ছিল কি? এ সংগ্রামের যারা নেতৃত্ব দান করেছেন তারা কি সমাজ বদল চেয়েছেন আদৌ? না, ক্ষমতার বদল চেয়েছেন দেশ গঠনের নামে?
.
মা, আমাদের সমস্যা এখানেই। আমরা বাঙালিদের অধিকার চেয়েছি। সকলেই চেয়েছে '৭১ সালের ৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করুন। কিন্তু তখন অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর মুখের চাওয়া আর হৃদয়ের চাওয়া এক ছিল না। মার্চ-এপ্রিল মাসে এদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী চায়নি যে পাকিস্তান ভেঙ্গে যাক। তারা হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারেনি যে বাংলাদেশের বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্থ পাকিস্তান ভেঙ্গে যাওয়া। আমার মনে হয় এখানে সংশয় ছিল। কারণ বৃটিশ তাড়িয়ে স্বাধীনতা আর পাকিস্তান ভেঙ্গে স্বাধীনতার মধ্যে পার্থক্য ছিল। ছয়দফায় পাকিস্তান ভাঙ্গার বীজ ছিল। সাধারণ মানুষের কাছে এ সত্যটি তখনও ব্যাখ্যার স্তরে ছিল। তাই অনেকেই আশা করেছিল ইয়াহিয়ার সঙ্গে আলাপ হবেই। এমনকি পাকিস্তানি হামলা শুরু হবার পরে ২৯ জুনের ইয়াহিয়ার ভাষণের জন্য অনেকে অপেক্ষা করেছে। কিন্তু পাকিস্তানি হামলা তীব্র হবার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে থাকে। পাকিস্তানি হানাদারেরা মা-বোনের গায়ে হাত দিতে শুরু করলে কট্টর পাকিস্তানপন্থিদেরও মনে হতে থাকে এভাবে থাকা যাবে না। অর্থাৎ পাকিস্তানে থাকা যাচ্ছে না। আমরা পাকিস্তানি থাকছি না, এ দাবি কিন্তু নয়। বাঁচতে হলে স্বাধীন হতে হবে। বাঁচার জন্য অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ভারতের সাহায্য প্রয়োজন। এটা ছিল ১৯৭১ সালের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তিক্ত অভিজ্ঞতার ফসল।
.
সুতরাং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল্যায়ন করতে হলে একটি অপ্রিয় সত্য মেনে নিতে হবে। অপ্রিয় সত্যটি হচ্ছে ১৯৭১ সালে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বাধীনতার চেতনা এসেছিল একটি নেতিবাচক শ্লোগান দিয়ে। আওয়ামী লীগ ছ'দফা দিয়েছে। ছ'দফা না মানলে স্বাধীনতা, এ কথাও স্পষ্ট নয়। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জিতেছে। ক্ষমতা হস্তান্তর না হলে স্বাধীনতা , এ কথাও অনুক্ত। নেতৃত্বের কেউ কেউ ভিন্নভাবে ভেবে থাকলেও সাধারণ মানুষ জেনেছে পাকিস্তান থাকছে। তবে নেতৃত্ব যাচ্ছে বাঙালির হাতে।
.
বাঙালির হাতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যই ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। দেশ স্বাধীন করার জন্য নয়। এ সময় অনেকেই অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ পাকিস্তান ভাঙ্গতে চাচ্ছে। আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করতে চাচ্ছে। এমনও বলা হয়েছে যে এর পেছনে আমেরিকা আছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ভাঙ্গন পাকিস্তানি সরকারই চাপিয়ে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ এক পাকিস্তান রাখতে চায়। বলা হতে পারে এটা ছিল কৌশল। তখন এ কৌশল অবলম্বন ভিন্ন পথ ছিল না। কিন্তু এ ধরণের কৌশল বুঝতে সাধারণ মানুষের সময় লাগে॥"
.
- নির্মল সেন / মা জন্মভূমি ॥ [ তরফদার প্রকাশনী - ডিসেম্বর, ২০০৭ । পৃ: ৮০-৮১ ]
|
![]() |
.
কুকুর ও তরুণী, সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী!
.
গ্রামের বড়রা মাঙ্গলি মুণ্ডার হাত দেখে বলেন, কোনও পুরুষের সঙ্গে তার বিয়ে হলে তা মুণ্ডা পরিবার ও সম্প্রদায়ের ধ্বংস ডেকে আনবে। যার সঙ্গে মাঙ্গলির বিয়ে হয়েছে সেই সারমেয়টির নাম ‘শেরু’। মাঙ্গলি কোনওদিন স্কুলে যায়নি। বিয়ের পর তার বক্তব্য, আমি মোটেও বিয়ে করে খুশি নই। কিন্তু গ্রামের মানুষের ও আমার কপালের কথা ভেবে আমাকে এই বিয়ে করতে হল। এই বিয়ের পর আমি একজন পুরুষকে বিয়ে করতে চাই যার সঙ্গে আমি অনেকদিন কাটাতে পারব।
মাঙ্গলি জানিয়েছে, আমি এই বিয়ে করতে চাইনি। কিন্তু গ্রামবাসীরা দ্রুত এই বিয়ে সেরে ফেলতে বলছিল। কারণ, তারা চান যত দ্রুত গ্রামের উপর থেকে দুর্ভাগ্যের ছায়া সরে যাক।
|
![]() |
আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করেছে।
.
নেই, বিশেষত্বও নেই। বিশেষত্ব এইটুকু যে এবারের বাজেটটি আকৃতিতে বড়। প্রতি বছরই আকার একটু একটু করে বাড়ছে। জাতীয় আয়ও বাড়ছে। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, এভাবে চললে নাকি অতি দরিদ্র মানুষ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। বেশ কিছু দিন আগে নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসও আমাদের শুনিয়েছিলেন, দারিদ্র্য নাকি জাদুঘরে পাঠানো হবে। নোবেলবিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দুজনেই কিন্তু বর্তমানের পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে অক্ষুণ্ন রেখেই দারিদ্র্য দূরীকরণের মহাস্বপ্ন দেখাচ্ছেন। এখন ড. ইউনূস সামাজিক ব্যবসার তত্ত্ব ফেরি করছেন, যা দাবি করছে শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মধ্যে এবং সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব কাঠামোর মধ্যেও দারিদ্র্য দূর করবে। হাস্যকর সব তত্ত্ব। যা সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থে ভালোই প্রচার পাচ্ছে। অর্থমন্ত্রীও অর্থনীতিবিদ। তিনি সচিব ছিলেন। তারপর সামরিক শাসক এরশাদের অর্থমন্ত্রীও ছিলেন। অতএব, তিনিও অভিজ্ঞ মানুষ। কিন্তু সব জেনেশুনেই তিনি প্রবোধ দিচ্ছেন যে, এভাবে চললে, অর্থাৎ মহাজোট সরকার ক্ষমতায় থাকলে এবং তাদের অর্থনৈতিক নীতির ধারাবাহিকতা থাকলে নাকি কয়েক বছর পর অতি গরিব মানুষ আর থাকবে না। অবশ্য আমরা এটা বলতে পারি, হাসিনা সরকারের বদলে খালেদা জিয়ার সরকার ক্ষমতায় এলেও অতীত থেকে চলে আসা বর্তমানের অর্থনৈতিক নীতির ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হবে না। কারণ আওয়ামী লীগ, বিএনপি অথবা নোবেলবিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের মতো সরকারের বাইরের কথিত সিভিল সোসাইটির অধিকাংশই একই পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণকারী- যা হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গের শামিল।
.
মুক্তিযুদ্ধের পর পর ১৯৭২ সালে যে সংবিধান রচিত হয়েছিল তাতে মুক্তিযুদ্ধের উত্তাপ কিছুটা হলেও অনুভূত হয়েছিল। সেজন্য সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। জিয়াউর রহমান সেটাকে বাতিল করেন। বর্তমান সরকার '৭২-এর সংবিধানকে আংশিক ফিরিয়ে এনেছেন। যেখানে 'সমাজতন্ত্র' আবার রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু তা কেবল পবিত্র গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। বাস্তবে সমাজতন্ত্রের ধারে-কাছেও নেই আওয়ামী লীগ সরকার। এভাবে আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করেছে।
.
বস্তুত বর্তমান সরকারসহ অতীতের সব সরকারই সংবিধান লঙ্ঘন করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করেছে। বাজেট নিয়ে মাসভর বহু আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে, কিন্তু এই মৌলিক ত্রুটির দিকটি কমই মিডিয়ায় এসেছে। ত্রুটি বললে কম বলা হবে। এটা হলো রাষ্ট্রীয় মূল নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মুক্তিযুদ্ধের লাখ লাখ শহীদের সঙ্গে বেইমানি।
.
গত শতাব্দীর আশির-নব্বইয়ের দশকে বিশ্বব্যাপী একটা সুর উঠলো- মুক্তবাজার অর্থনীতি। নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ, মিলটন ফ্রিডম্যান ছিলেন বিশ্বায়ন ও মুক্তবাজার অর্থনীতি, বাজার সর্বস্বতার নীতির প্রধান প্রবক্তা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিগান ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার বিশ্বব্যাপী এই নীতি কার্যকর করতে এগিয়ে এলেন। সাম্রাজ্যবাদী নীতির তল্পিবাহক আমাদের বুর্জোয়া রাজনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিদরাও ওদের সুরে সুর মিলিয়ে মুক্তবাজারের গান ধরলেন এবং আমদানি উদারিকরণের প্রাইভেটাইজেশনের পলিসি গ্রহণ করলেন। সমাজতন্ত্র তো দূরের কথা এমনকি স্বাধীন আত্দনির্ভরশীল অর্থনীতির পথও পরিত্যাগ করলেন আমাদের দেশের কর্ণধাররা, সরকারের নীতিনির্ধারকরা। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ, বিএনপির মধ্যে কোনো তফাৎ ছিল না। বর্তমান অর্থমন্ত্রী এতটা পর্যন্ত গেছেন যে, তিনি বাজেট বক্তৃতায় কোনো দ্বিধা না রেখে সরাসরি বলেছেন, 'ভবিষ্যতে আমাদের বিশ্ববাজারটি হবে মুক্তবাজার। তাই আমদানি শুল্ক সূত্রে আর রাজস্ব আসবে না।' সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে এবারের বাজটেও কয়েকশ পণ্য আমদানিতে পুরোপুরি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাহলে দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করবে কে? বাজার ছেয়ে যাবে বিদেশি পণ্যে। আমাদের দেশে যেসব উদ্যোক্তা আছেন, তারা মার খাবেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানের সাম্রাজ্যবাদ তথা বহুজাতিক কোম্পানির দালাল পুঁজিপতিদের সরকার সমাজতন্ত্রকে তো বাদ দিয়েছেনই, এমনকি স্বাধীন অর্থনৈতিক বিকাশের পথও রুদ্ধ করে রেখেছেন। এভাবে কি দারিদ্র্য দূর হবে?
.
আমাদের সরকার ব্যক্তি খাতকে সহায়তা করতে হবে বলে চিৎকার করে । কিন্তু ব্যক্তি খাত বলতে তারা লুটেরা ধনীক গোষ্ঠীকেই বোঝান, যারা বিনিয়োগে উৎসাহী নয়, যারা বিদেশে অর্থপাচার করতেই আগ্রহী। সবচেয়ে বড় ব্যক্তি খাত হলো কৃষি খাত। সেই খাতে বরাদ্দের হার কমেছে। সরকার এখানেও ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে। বলে যে, কৃষি খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বেড়েছে। বস্তুত সামগ্রিক বাজেটের পরিমাণ বাড়লে সব খাতেই কিছু না কিছু বাড়বে। কিন্তু যেখানে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে কৃষি খাতে বরাদ্দ ছিল ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ তা এখন কমতে কমতে ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
.
অর্থমন্ত্রী আমাদের মহাবাজেটের মহাস্বপ্ন দেখিয়েছেন। প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হারে। এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে কী বিশাল পরিমাণ বিনিয়োগ লাগবে তা কি সরকার ভেবে দেখেছে? অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ আবদুল মুহিত নিশ্চয়ই ব্যাপারটি ভালো করে জানেন। তবে কেন অযথা প্রবোধ দেওয়া? একেই বলে ফাঁকির রাজনীতি। শিল্পে বিনিয়োগ আসবে ব্যক্তি খাত থেকে। কিন্তু আমাদের ব্যক্তি খাত তো উৎপাদন অপেক্ষা বিদেশি বহুজাতিকের দালালি, কালোবাজারি, ঠিকাদারি ও ফটকা ব্যবসায় বেশি উৎসাহী। এভাবে অর্জিত টাকা তারা বিদেশে চালান করে। দেশে যে টাকা থাকে তা হলো কালো টাকা। সেই টাকা যায় অবৈধ দখলদারি, জমি ক্রয় ও অন্যান্য অনুৎপাদনশীল কাজে। তাহলে ব্যক্তি খাত থেকেইবা কীভাবে এই বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ আশা করা যায়?
.
.
বিনিয়োগ চাইলে অবশ্যই ব্যাংক ঋণের সুদের হার যথেষ্ট পরিমাণ কমাতে হবে। সেটাও কি সম্ভব? সুদের হার কমালে মুদ্রাস্ফীতির হার বাড়বে। জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। মুক্তবাজার অর্থনীতির দার্শনিক ভিত্তি হলো, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে না। তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গরিব ও মধ্যবিত্ত। অথচ সরকার আশ্বস্ত করছে যে, চরম দারিদ্র্যের সংখ্যা নাকি শূন্যে চলে আসবে। মিথ্যা প্রবোধ আর ফাঁকি কত দেবেন? সাত দশমিক তিন শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধির স্বপ্ন দেখানোটা একেবারেই ফাঁকিবাজি কারবার। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন অন্য এক জায়গায়? জাতীয় আয় বাড়লেই কি দারিদ্র্য দূর হয়? বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়েছে, আমাদের বার্ষিক মাথাপিছু আয় হচ্ছে ১১৯০ মার্কিন ডলার। এটি হচ্ছে সমগ্র জনগণের গড় আয়। এর দ্বারা আসল চিত্র বোঝা যায় না। ধরা যাক, সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী গার্মেন্ট শ্রমিকের কথা। একজন গার্মেন্ট শ্রমিক অথবা একজন ক্ষেতমজুর কী বছরে ১১৯৫ ডলারের সমান আয় করেন? জাতীয় আয় বাড়লেই যে সবার আয় বাড়বে এবং এভাবে দারিদ্র্য দূর হবে, তাও একটা ভুল ধারণা। ইচ্ছাকৃতভাবে এই মিথ্যা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
.
আমরা দেখছি, জাতীয় আয় বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে ধনী দরিদ্রের ফারাক। বাড়ছে অর্থনৈতিক শোষণ ও বৈষম্য। সংবিধানে এখনো কেন 'সমাজতন্ত্র' কথা লেখা আছে। আর কত প্রতারণা করবেন? আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী মন্দা, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ২০১৩ সালের শেষভাগে হরতাল-অবরোধ ও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, চরম দুর্নীতি, সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, টেন্ডারবাজি, দখলদারিত্ব ইত্যাদি কারণে অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেও বাংলাদেশের গত বছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.১২ শতাংশ। কৃতিত্ব গার্মেন্ট শ্রমিকদের যারা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত, শোষিত ও দারিদ্র্যের মধ্যে থাকে। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ট্রেড ইউনিয়ন, অধিকার পর্যন্ত নেই।
.
হায়! সমাজতন্ত্র। ওটা কেবল কেতাবেই থাকবে। আরও কৃতিত্ব বিদেশে কর্মরত বাঙালি শ্রমিকদের যাদের আমাদের দূতাবাসগুলো তুচ্ছতাচ্ছিল্যই করে। কৃতিত্ব কৃষকের ও স্বল্প পুঁজির মালিক অসংখ্য উদ্যোক্তার, যাদের কথা বাজেট প্রণেতা ও নীতিনির্ধারকরা ভেবেও দেখেন না। গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা, হরতাল ইত্যাদির কারণে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ থাকেনি। কৃষিকাজও বন্ধ থাকেনি। এমনকি গার্মেন্টও বন্ধ থাকেনি। কারণ গার্মেন্টের মালিকদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের লোকই আছেন।
.
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, এবারের বাজেটে কিন্তু গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য রেশন অথবা বাসস্থান বরাদ্দ রাখা হয়নি। ন্যায্য মজুরির কোনো বিধানও রাখা হয়নি। এই বাজেট নাকি দারিদ্র্য দূর করবে। কাঁঠাল দিয়ে কি আমসত্ত্ব হয়? ধনীর তোষণকারী বাজেট, সাম্রাজ্যবাদের প্রতি নতজানু কর্মকর্তাদের দ্বারা কি দরিদ্রদের কল্যাণ হবে?
বাজেটের বড় আকার দেখে অথবা প্রবোধবাক্য শুনে খুশি হওয়ার কিছু নেই। যত বড় বাজেটই হোক, এর কার্যকারিতাই বা কতটুকু? বাজেট দ্বারা সাধারণ অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রিত ও প্রভাবিত করা যায়। কিন্তু অর্থনীতির অর্ধেকের বেশি অংশ যদি হয় কালো অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত সেখানে বাজেট বা সরকারি নীতি কী করতে পারে? কিছু দিন আগে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, অর্থনীতির ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কালো টাকা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই যদি বাস্তব হয়, তাহলে বাজেটের তাৎপর্যই বা কি, তা বড়ই হোক বা ছোটই হোক।
.
সব মিলিয়ে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, আগামী কয়দিন পর যে বাজেটটি পাস হতে যাচ্ছে, তা আকারে যত বড়, ফাঁকিবাজিটাও ঠিক ততই বড়। যতদিন পর্যন্ত কালো টাকার দৌরাত্দ্য, দুর্নীতি ও দখলদারি অর্থনীতি কার্যকর থাকবে, ততদিন পর্যন্ত দারিদ্র্য দূরীকরণ, জনকল্যাণ ইত্যাদি কথা মরীচিকার মতোই বিভ্রান্ত করতে পারবে।
.
লেখক : হায়দার আকবর খান রনো, রাজনীতিক।
|
![]() |
.
তাজউদ্দীনের কাছে সেনা অভ্যুত্থানের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জিয়া!
.
সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত লিখেছেন, ১৯৭৫ সালের এপ্রিলের এক সকালবেলা। আগের দিন ভারতের কৃষি ও সেচ মন্ত্রী জগজীবন রাম ঢাকা সফরে আসেন। ফারাক্কা চুক্তিতে সই করেন। আলোচনা ও চুক্তির বিষয় সম্পর্কে খবর সংগ্রহের জন্য কয়েকজন ভারতীয় সাংবাদিক যখন সরকারি দফতরে গেলেন দেখলেন তারা ইতিমধ্যে সরকারের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন। তার ভাষায়_ 'কিছুকাল আগেও আমাদের সাদরে ডেকে কথা বলত ওরা। হঠাৎ হাওয়া বদলে গেছে। দূর পশ্চিমের কিছু বিদেশি সাংবাদিককে সাদরে বরণ করার জন্য যেন লাল কার্পেট বিছানো। আর আমরা হয়ে পড়েছি অবাঞ্ছিত আগন্তুক। পরদিন সকালেই গেলাম তাজউদ্দীনের কাছে। হাতে আমার বিদ্যাসাগর রচনাবলীর একটি খণ্ড। দুই খণ্ড আগেই তাকে দিয়েছিলাম। তিনি আমাকে বিদ্যাসাগর রচনাবলী সংগ্রহ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। এবার তৃতীয় খণ্ড নিয়ে গেলাম। আমাকে দেখেই তাজউদ্দীন বললেন, জরুরি কথা আছে, বসুন। সেখানে উপস্থিত অন্যদের চলে যেতে বললেন। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। তার কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন মনে হলো। বলতে শুরু করলেন, গত চার-পাঁচ মাস আমি ঘর থেকে এক পা বেরুইনি।
.
একটা ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র দানা বেঁধে উঠছে। জানতে চাইলাম কী ধরনের ষড়যন্ত্র? তিনি বললেন, কী রকম? হত্যা! হত্যার ষড়যন্ত্র! আমি শিউরে উঠি। প্রশ্ন করি_ কারা এই ষড়যন্ত্র করছে? নাম জানতে পারি? তাজউদ্দীন গম্ভীরভাবে বললেন, কী হবে আর নাম শুনে! তারা সব শেখ সাহেবের বিশ্বস্ত লোক। শেখ সাহেব তা জানেন? জানার তো কথা। তাজ গোড়া থেকে ব্যাপারটা বলতে থাকেন। ক'দিন আগে এক রাত্রে মেজর জেনারেল জিয়া দেখা করতে আসে। সে প্রস্তাব দিল, সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে মুজিবকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে। তার পরে তাকে আটক রাখা হবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে। এ ব্যাপারে সে তাজউদ্দীনের সমর্থন চায়। তিনি সাফ জানিয়ে দেন এর মধ্যে তিনি নেই। তাজউদ্দীন বললেন, নিজের থেকে যে জিয়া আসেনি আমার কাছে, তা বেশ বুঝতে পারলাম। ওকে পাঠানো হয়েছিল, এ রকম একটা প্রস্তাবে আমার কী প্রতিক্রিয়া হয় তা বুঝতে। আমি অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই জিয়ার কথাটা জানিয়ে দেই মুজিবকে। মুজিব কী বললেন? তাজউদ্দীনের জবাব, আমি বুঝতে পারলাম না মুজিব আমাকে বিশ্বাস করলেন কি না। যা হোক, আমি কিছুদিনের জন্য অন্তত রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চাই। আমার এক ভাই পাশের ঘরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। তা নিয়েও আমাকে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। তা ছাড়া দেশের যা পরিস্থিতি এখন তা অত্যন্ত দূষিত। ভারতবিরোধী মনোভাব চরমে পেঁৗছেছে। যে সাম্প্রদায়িক শক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি জান্তার লেজুড়বৃত্তি করেছে তারাই আজ প্রশাসনের মাথায় চড়ে বসছে। এই অবস্থায় ভারত সরকার আর ভারতের জনগণের সামনে আমি কোন মুখে দাঁড়াব? আপনি জানেন, আমাদের সেই সংগ্রামের দিনে আপনাদের সরকার আর জনগণ কী না করেছে আমাদের জন্য। আজ সেই পরম বন্ধু ভারতের বিরুদ্ধে কদর্য মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে। এসবের পিছনে একটা উদ্দেশ্য রয়েছে, আমি জানি। তাই আমি দূরে সরে থাকতে চাই। সুখরঞ্জন দাসগুপ্তের মন্তব্য ছিল, তা তো থাকলেন, কিন্তু আপনি যে সাংঘাতিক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তাজউদ্দীন বললেন, হ্যাঁ, সাংঘাতিক ষড়যন্ত্র। আমরা সবাই শেষ হয়ে যাব এতে। মানে? মানে আমাদের সবাইকে খতম করার পরিকল্পনা প্রস্তুত। সেকি! আপনাদের কিছু করবার নেই ষড়যন্ত্র বানচাল করতে? কিছু করুন একটা। সুখরঞ্জন দাসগুপ্তের ভাষায়, করব? তাজউদ্দীনের দীর্ঘশ্বাস পড়ল। তিনি আমার দিকে গভীর দৃষ্টি রেখে বললেন, আপনাকে এসব বলছি, কারণ আমি জানি আপনি আমার বন্ধু। আপনাকে একটা অনুরোধ করছি, কলকাতায় গিয়ে গোলক মজুমদারকে ব্যাপারটা বলবেন দয়া করে। গোলক মজুমদার তখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আইজি। ১৯৭১-এ তাজউদ্দীন যখন বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসার চেষ্টা করছিলেন তখন ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গোয়েন্দাপ্রধান তাকে সীমান্ত থেকে সাদরে সসম্মানে গ্রহণ করেন। তাকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হেডকোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে এদের সঙ্গে তাজউদ্দীন ও স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ঘনিষ্ঠতা জন্মায়। সুখরঞ্জন দাসগুপ্তের ভাষায়_ তিনি তাজউদ্দীনকে কথা দিলেন তার বার্তা তিনি যথাস্থানে পেঁৗছে দেবেন। তাজউদ্দীন আহমদ ষড়যন্ত্রের বিষয়টি তখন তাকে গোড়া থেকে বললেন। তাজউদ্দীনের ভাষায়, ভুট্টোর বাংলাদেশ সফরের পর থেকেই খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের চার-পাঁচজন শয়তান মুজিব সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করে আসছে। এবং বাইরের শক্তি বিশেষের সাহায্যও পাচ্ছে তারা। বাণিজ্যমন্ত্রী মোশতাক জেদ্দা গিয়েছিলেন। সেখানে পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলও ওই সময়ে ছিল। সেখানে বসেই ষড়যন্ত্রের ছক পাতা হয়। সেখান থেকে ফিরে আসার পর খন্দকার মোশতাক ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিট ফস্টারের সঙ্গে ঘন ঘন মিলিত হন। তাজউদ্দীন আরও বলেন, আমি অর্থ দফতর ছেড়ে দিলাম। এর পরেই মার্কিন দূতাবাস ব্যাংক থেকে একদিনে তিন কোটি টাকা তুলে নেয়। ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে অর্থ এসে গেল অঢেল। তাজউদ্দীনের কথায় কৌতূহলী সুখরঞ্জন দাসগুপ্তের প্রশ্ন ছিল_ আমেরিকার কী স্বার্থ থাকতে পারে এতে? তাজউদ্দীনের জবাব ছিল, অনেক স্বার্থ। ইয়াহিয়া এবং ভুট্টো যখন বাংলাদেশে গণহত্যা চালাচ্ছিল তখন একমাত্র আমেরিকাই ওদের সমর্থন করে। এখন তারা তাদের সেই সমর্থনের পিছনকার আসল উদ্দেশ্যটি হাসিল করতে চায়। তাই ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। অপরদিকে সৌদি আরব, জর্দান, লিবিয়ার মতো দেশগুলো কোনোক্রমেই 'ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ'কে মানতে পারছে না। বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র করার জন্য পরোক্ষভাবে তারা চাপ দিয়ে চলেছে। তা হলে তারা নানা সাহায্য দেবে বলে লোভ দেখাচ্ছে। কিন্তু, ১৯৭০ এবং '৭৩-এ যে নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হই তাতে ধর্মনিরপেক্ষতাকেই আদর্শরূপে ঘোষণা করি। আজ সে নীতি বর্জনের কথা কিছুতেই উঠতে পারে না। অথচ তারা সেটি চায়। এর সঙ্গে আছে মোশতাক চক্র। খন্দকার মোশতাক কখনো স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ চাননি। সর্বদা তিনি পাকিস্তানি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
|
![]() |
দোয়া চেয়ে সকালে নিজের কুলখানি বিকেলেই মৃত্যু!
.
মৃত্যুর পরে কুলখানি হয়, এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু এবার মৃত্যুর আগেই নিজের কুলখানির আয়োজন করেছেন দাউদকান্দি উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের বিশিষ্ট সমাজসেবক ১০১ বছরের বৃদ্ধ হাজী দুধ মিয়া বেপারী। গতকাল রবিবার সকালে পদুয়ার মহিষমারি গ্রামের বাড়িতে নিজ হাতে গরিব ও এলাকাবাসীকে খাওয়ানো শেষে বিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
.
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পদুয়া ইউনিয়নের মহিষমারি গ্রামের হাজী জব্বর আলীর ছেলে এলাকার সমাজসেবক হাজী দুধ মিয়া বেপারী ইচ্ছা পোষণ করেন তাঁর বয়স শত বছর পূর্ণ হলে তিনি নিজের কুলখানি নিজ হাতে করে যাবেন। গতকাল ১০১ বছরে পা দেন তিনি। তাঁর সেই ইচ্ছা অনুযায়ী গতকাল চারটি গরু জবাই দিয়ে গরিব-দুখী, এলাকাবাসীসহ চার হাজার জনের জন্য ভোজসভার আয়োজন করেন তিনি। এতে সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও আমন্ত্রিত হন। কুলখানির অনুষ্ঠান শেষে সবাই যার যার মতো চলে যায়। বিকেলে খবর আসে দুধ মিয়া বেপারী ইন্তেকাল করেছেন। আসরের নামাজের পর তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। এলাকাবাসী আবার ছুটে যায় দুধ মিয়ার বাড়ি। সেখানে গিয়ে এর সত্যতা খুঁজে পায়। পরে আসর নামাজের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভুঁইয়াসহ নানা শ্রেণী-পেশার কয়েক হাজার লোক তাঁর জানাজায় অংশ নেয়।
.
জানাজার আগে দুধ মিয়া বেপারীর ছেলে মো. আবুল হোসেন বলেন, "বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল শতবর্ষ পূর্ণ হলেই নিজের কুলখানি নিজে উপস্থিত থেকে করে যাবেন। সেই অনুযায়ী গতকাল চার হাজার লোককে দাওয়াত করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে আমাকে ডেকে বলে, 'আমার শরীরটা কেমন জানি লাগছে। আমাকে তোমরা ডাক্তারের কাছে নিবা না। আমার সময় শেষ।' একথা বলেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।"
|
![]() |
.
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি
|
![]() |
বীরাঙ্গনা গুরুদাসী মাসি।
.
দেশের জন্য স্বর্বস বিলিয়ে দেয়া গুরুদাসী মাসিকে কেউ মনে রাখেনি।
.
১৯৭১ সাল,মুক্তিকামী মানুষের উপর চলছে পাক হানাদার বাহিনীর নির্যাতন। তাদের পাশবিক নির্যাতন থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা শিশু,বৃদ্ধা সহ মহিলারা। এমনই একদিনে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই পাক বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকারদের সহায়তায় হামলা চালায় খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটিয়া ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামে।
.
ফুলবাড়ি গ্রামের গুরুপদ মন্ডল,পেশায় একজন দর্জি। ২ ছেলে ২ মেয়ে আর স্ত্রী গুরুদাসী মাসিকে নিয়ে তার সংসার। স্থানীয় রাজাকারের ইন্দনে পাক বাহিনী তার বাড়িতে হামলা চালায়। একে একে বাড়ির লোকজনরে উঠোএ এনে জড়ো করা হয়। গুরুদাসী মাসির উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে পাক সেনাদের। নিজ স্ত্রীকে বাচাতে গেলে গুরুদাসীর সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় স্বামী,২ ছেলে ও ১ মেয়েকে। এরপর গুরুদাসীর কোলে থাকা দুধের বাচ্ছা মেয়েকেও কেড়ে নিয়ে হত্যা করা হয়। মায়ের সামনেই তাকে পুতে ফেলা হয় বাড়ির পাশে কাদা পানির ভিতরে।
.
তারপর তার উপর চলে পাক সেনাদের পাষবিক নির্যাতন। পাক সেনারা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে। নিজের চোখের সামনে স্বামী,সন্তানের মৃত্যু ও নিজের সম্ভ্রম হারিয়ে গুরুদাসী ততক্ষনে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
.
দেশ স্বাধীনের গুরুদাসীর খবর কেউ রাখেনি। মানসিক ভারসাম্যহীন গুরুদাসী ভিক্ষে করে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যান।
|
![]() |
.
মাওলানা ভাসানীর একটা মজার ঘটনা আছে।
.
পাকিস্তান আমলে এক মসজিদের প্রাঙ্গনে একবার তাঁর বক্তৃতা দেয়ার কথা।বহুদূর থেকে মানুষ এসেছে তাঁর কথা শুনতে।চারদিক লোকে লোকারণ্য।এমনসময় পাকিস্তানী সেনারা ঘিরে ফেলল মসজিদ।সরকারের বারণ, বক্তব্য দেয়া যাবেনা।
.
মাওলানা ভাসানী মাইকে বললেন, "ভাইয়েরা, আমি আজ বক্তৃতা দিতে পারবনা।সরকারের নিষেধ আছে।বক্তৃতা দেয়া নিেষধ, দোয়া করায় তো নিষেধ নাই।আসেন সবাই আল্লাহর দরবারে হাত তুলে দোয়া করি"-বলে মোনাজাত ধরলেন।সবাইকে মোনাজাত ধরতে দেখে খানসেনারাও মোনাজাত ধরল।তো তিনি আল্লাহর দরবারে হাত তুলে তাঁর সেদিনের বক্তৃতায় যা যা বলার কথা ছিল কিছুই বাদ দিলেন না।পশ্চিম পাকিস্তানী সরকারের বিরুদ্ধে যা বলার ছিল সবই বললেন।পাকিস্তানী সেনারাও সেই পশ্চিম পাকিস্তানী শাষকদের বিষোদ্গারপূর্ণ দোয়ায় অংশ নিল!
|
![]() |
‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়’
.
ফরাসি সাংবাদিক বার্নার্ড হেনরি লেভি বলেছেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ তার জীবনের গৌরবোজ্জ্বল শ্রেষ্ঠ সময়। ঢাকা সফররত হেনরি লেভি আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।
.
শাকিল বলেন, ১৯৭১ সালে বিশিষ্ট ফরাসি উপন্যাসিক আঁন্দ্রে মালরোর আহ্বানে পশ্চিমা বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক ব্রিগেডের একজন সদস্য হিসেবে লেভি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু লেভিকে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে চাকরি দেন। বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের উপর লেভির লেখা ‘লেস ইনডিজ রুজস’ বইটি এ বছর বাংলায় প্রকাশিত হয়েছে।
.
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কঠিন সময়ের কথা স্মরণ করে লেভি বলেন, বাংলাদেশ অতীতে একটি ঔপনিবেশ ছিল। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে ৩ বছরে একে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পুনর্গঠিত করেন, যা বিশ্বে নজিরবিহীন। তিনি বলেন, একজন বিপ্লবী নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
|
![]() |
.
প্রবাসী শারমিন আহমদ সদ্য প্রকাশিত ‘তাজউদ্দীন আহমদ নেতা ও পিতা’ গ্রন্থে কি লিখেছে.. মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে তাজউদ্দীন কন্যা লিখেছেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৫শে মার্চের ভয়াল কালোরাতে আব্বু গেলেন মুজিব কাকুকে নিতে। মুজিব কাকু আব্বুর সঙ্গে আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করবেন সেই ব্যাপারে আব্বু মুজিব কাকুর সাথে আলোচনা করেছিলেন। মুজিব কাকু সে ব্যাপারে সম্মতিও দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী আত্মগোপনের জন্য পুরান ঢাকায় একটি বাসাও ঠিক করে রাখা হয়েছিল। বড় কোনও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আব্বুর উপদেশ গ্রহণে মুজিব কাকু এর আগে দ্বিধা করেননি। আব্বুর সে কারণে বিশ্বাস ছিল যে, ইতিহাসের এই যুগসন্ধিক্ষণে মুজিব কাকু কথা রাখবেন। মুজিব কাকু, আব্বুর সাথেই যাবেন।
.
অথচ শেষ মুহূর্তে মুজিব কাকু অনড় রয়ে গেলেন। তিনি আব্বুকে বললেন, বাড়ি গিয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকো, রশু দিন (২৭শে মার্চ) হরতাল ডেকেছি। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী আব্বু স্বাধীনতার ঘোষণা লিখে নিয়ে এসেছিলেন এবং টেপ রেকর্ডারও নিয়ে এসেছিলেন। টেপে বিবৃতি দিতে বা স্বাধীনতার ঘোষণায় স্বাক্ষর প্রদানে মুজিব কাকু অস্বীকৃতি জানান। কথা ছিল যে, মুজিব কাকুর স্বাক্ষরকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্ টালে (বর্তমানে শেরাটন) অবস্থিত বিদেশী সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে এবং তাঁরা গিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ পরিচালনা করবেন।
.
২৫শে মার্চের ভয়াল কালো রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তাজউদ্দিন আহমদের সাক্ষাতের বর্ণনা দিয়ে শারমিন আহমদ আরও লিখেছেন, মুজিব কাকুর তাৎক্ষণিক এই উক্তিতে (বাড়ি গিয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকো প্রসঙ্গে) আব্বু বিস্ময় ও বেদনায় বিমূঢ় হয়ে পড়লেন। এদিকে বেগম মুজিব ওই শোবার ঘরেই সুটকেসে মুজিব কাকুর জামাকাপড় ভাঁজ করে রাখতে শুরু করলেন। ঢোলা পায়জামায় ফিতা ভরলেন। পাকিস্তানি সেনার হাতে মুজিব কাকুর স্বেচ্ছাবন্দি হওয়ার এই সব প্রস্তুতি দেখার পরও আব্বু হাল না ছেড়ে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন ঐতিহাসিক উদাহরণ টেনে মুজিব কাকুকে বোঝাবার চেষ্টা করলেন।
.
তিনি কিংবদন্তি সমতুল্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উদাহরণ তুলে ধরলেন, যাঁরা আত্মগোপন করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। কিন্তু মুজিব কাকু তাঁর এই সিদ্ধান্তে অনড় হয়ে রইলেন। আব্বু বললেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্য হলো- পূর্ব বাংলাকে সম্পূর্ণ রূপেই নেতৃত্ব্বশূন্য করে দেয়া। এই অবস্থায় মুজিব কাকুর ধরা দেয়ার অর্থ হলো আত্মহত্যার শামিল। তিনি বললেন, মুজিব ভাই, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হলেন আপনি। আপনার নেতৃত্বের ওপরই তারা সম্পূর্ণ ভরসা করে রয়েছে। মুজিব কাকু বললেন, ‘তোমরা যা করবার কর। আমি কোথাও যাবো না।’ আব্বু বললেন, ‘আপনার অবর্তমানে দ্বিতীয় কে নেতৃত্ব দেবে এমন ঘোষণা তো আপনি দিয়ে যাননি। নেতার অনুপস্থিতিতে দ্বিতীয় ব্যক্তি কে হবে, দলকে তো তা জানানো হয়নি। ফলে দ্বিতীয় কারও নেতৃত্ব প্রদান দুরূহ হবে এবং মুক্তিযুদ্ধকে এক অনিশ্চিত ও জটিল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়া হবে।’ আব্বুর সেদিনের এই উক্তিটি ছিল এক নির্মম সত্য ভবিষ্যদ্বাণী।
.
স্বাধীনতার ঘোষণায় বঙ্গবন্ধুর অস্বীকৃতি জানানোর পর তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘মুজিব ভাই, এটা আপনাকে বলে যেতেই হবে। কারণ কালকে কি হবে, আমাদের সবাইকে যদি গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়, তাহলে কেউ জানবে না, কি তাদের করতে হবে। এই ঘোষণা কোন না কোন জায়গা থেকে কপি করে আমরা জানাবো। যদি বেতার মারফত কিছু করা যায়, তাহলে সেটাই করা হবে। মুজিব কাকু তখন উত্তর দিয়েছিলেন-‘এটা আমার বিরুদ্ধে দলিল হয়ে থাকবে। এর জন্য পাকিস্তানিরা আমাকে দেশদ্রোহের জন্য বিচার করতে পারবে।’
শারমিন আহমদ আরও লিখেছেন, আব্বুর লেখা ওই স্বাধীনতার ঘোষণারই প্রায় হুবহু কপি পরদিন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। ধারণা করা যায়, ২৫শে মার্চের কয়দিন আগে রচিত এই ঘোষণাটি আব্বু তার আস্থাভাজন কোন ছাত্রকে দেখিয়ে থাকতে পারেন। স্বাধীনতার সমর্থক সেই ছাত্র হয়তো স্বউদ্যোগে বা আব্বুর নির্দেশেই স্বাধীনতার ঘোষণাটিকে বহির্বিশ্বের মিডিয়ায় পৌঁছে দেন। মুজিব কাকুকে স্বাধীনতার ঘোষণায় রাজি করাতে না পেরে রাত ৯টার দিকে আব্বু ঘরে ফিরলেন বিক্ষুব্ধ চিত্তে। আম্মাকে সব ঘটনা
|
![]() |
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ
.
আজ ১৭ এপ্রিল। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। এই দিনটি বাঙালি জাতির জন্য এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে তদানীন্তন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেই এই আমবাগানকে মুজিবনগর নামকরণ করে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করা হয়।
.
ইতোপূর্বে ১০ এপ্রিল এমএনএ ও এমপিদের কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা ও পাক হানাদার বাহিনীকে আমাদের স্বদেশ ভূমি থেকে বিতাড়িত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত এবং নির্দেশিত পথে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের জন্য এই সরকার গঠন করা হয়। সেই সরকারের অন্যতম প্রাণপুরুষ ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। সরকার গঠিত হয় ১০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে। শপথ গ্রহণ করেন ১৭ এপ্রিল। সেদিন মুজিবনগরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গঠিত হয় বাংলাদেশের প্রথম সরকার।
.
তবে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকায় বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে করা হয় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। এই সরকার গঠনের ফলে বিশ্ববাসী স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামরত বাঙালিদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সরকার মুজিবনগর সরকার গঠন বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবগাথা সাফল্যের স্বাক্ষর।
.
মুজিবনগর সরকারে ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলীকে অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তৎকালীন কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়।
.
এই দিন ১০ এপ্রিল গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র কোরান তেলওয়াতের পর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন এবং নবগঠিত সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ও প্রধান সেনাপতি কর্নেল এম. এ. জি ওসমানী (পরবর্তীতে জেনারেল) বক্তব্য রাখেন। এমনিভাবেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সংসদের নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক সরকার বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করে।
.
মুজিবনগর সরকারে আব্দুল মান্নানকে প্রেস, তথ্য রেডিও ও চলচ্চিত্র বিভাগের প্রধান, মো. ইউসুফ আলীকে ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান, মতিউর রহমানকে বাণিজ্য বিভাগের প্রধান, আমিরুল ইসলামকে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান এবং মেজর আব্দুর রবকে (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি উচ্চপদস্থ অনেক কর্মকর্তারা মুজিবনগর সরকারে দায়িত্ব পালন করেন। নুরুল কাদের খান, এস. এ সামাদ, খন্দকার আসাদুজ্জামান, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ড. সাদাত হোসাইন ও ড. আকবর আলী খান তাদের মধ্যে অন্যতম।
.
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের পর পাড়ায় পাড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হলেও মুজিব নগর সরকারই প্রথমে মুক্তিবাহিনীদের বিভিন্ন থানা থেকে অস্ত্র এবং কলকাতা ও আগরতলার ট্রেজারি থেকে টাকা পয়সা এনে মুক্তিযোদ্ধাদের সকল প্রকার সহযোগিতা করেছে।
|
![]() |
যত বড় রাজাকার তত বড় মুক্তি যোদ্ধা , শুনা নয় চোখে দেখা । নিজের এলাকাতে বর্তমান স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোকদের তালিকা হলফ করুন এবং বুঝে দেখুন, কারা করছে মুক্তি যুদ্ধের ব্যবসা ।
.
৭১এর ৭ মার্চ, ছোট ছিলাম তখন, অনেক বেশী ছোট ছিলাম। মনে হয় ১২ ইঞ্চি সাদা কালো টিভির সামনে আমরা ছোটরা সবাই জড়ো হয়ে সামনের বসে পড়লাম, তখন ত আর এত টিভি ছিল না। বড়রা সবাই এক সাথে শুনছে, ছোট রুমে সবাই গাদাগাদি হয়ে আছে। কারন এখন একটা গুরুত্ত্বপুর্ন কিছু দেখান হবে।
.
৬ দফা ১১ দফা এসব বুঝি না, হা করে টিভির দিকে তাকিয়ে আছি, একজন লোক এসে চিক্কুর দিয়া কিছু কইলেন, চারিদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ, সবাই জোরে জোরে চিক্কুইর দিতেছে। বুঝতে পারছি না কি বলছে, তবে ব্যাপারটা যে খুব উত্তেজক সেটা বুঝতে পারছি সবার চোখে মুখে তাকিয়ে, তখনো ঠিক স্কুলে যাবার বয়স হয় নাই।
.
যাক, সে দিন থেকেই আমাদের বাইরে যেয়ে খেলা নিষিদ্ধ করা হল, আর কিছু দিন পরেই দেখি খান্সামারা হাজির! ওহ, ভিষন দুশ্চিন্তায় সবাই, আমি মিস করছি খেলা। চারিদিকে শুন শান, লোক চলাচল খুব কম, কিছু গোলাগুলির শব্দে আত্নকিত হই। এত বোরডম আর ভাল্লাগে না, একদিন চুরি করে বাইরে গেলাম।
.
খাইছে আমারে, এক পাক সেনা ডাক দিল, 'এই বাচ্চা ইধার আও'। গেলাম কাছে, হালায় কি কইল কিছু বুঝলাম না। এইটা আবার আমার বন্ধুরা দেখে ঘরে খবর দিল। কাম সারছে! ঘরে আস্তেই সে কি কান্নাকাটি! যাই হোক পরের দিন আমাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেবার ব্যাবস্থা হল। ঢাকা থেকে নঔকায় করে গ্রামে যাচ্ছি, ৪ দিন ৪ রাত পরে গ্রামে এসে হাজির হলাম, পথে বিচিত্র অভিজ্ঞতা, সব মনে নেই।
.
এখন ত অনেক চেতনা চেতাইয়া অনেক কে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনান। অবাক হই!
.
মুর্গি চোর শাহরিয়ার কবির ৭১ সালে কোন সেক্টরে মুক্তি যুদ্ধ করেছেন, একটু কেঊ বলবেন? সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ত তখন তাগড়া মরদ ছিল, উনি কি তখন সোনাগাছিতে যুদ্ধ করেচেন? মুন্তাসির মামুন উনি ত বিশিস্ট মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখেছেন, কি করে পাকিরা মেয়েদের যোনিপথে বেয়নেট দিছে, স্তন কেটে সেটা কামড়ে খেয়েছে, এই সব চটি গল্প লেখাতে উনি খুব ওস্তাদ, কোন সেক্টরে উনি যুদ্ধ করেছেন, কেঊ কি বলবেন?
.
জাফর ষাড়টি এত ঘোত ঘোত করে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে, উনি ত তখন ২১ বছরের যুবা ছিলেন, রুপবানের মত চেহারা, ওনার মামা ছিলেন খান্সামাদের চেলা, ওনার পিতা পাকিদের ফরমাস খেটেছেন, অই ষাড়টি ৭১ সালে কোথায় যুদ্ধ করেছে, কেঊ কি বলবেন?
.
এই যে জাহানারা ইমাম, ওনার সন্তান মুক্তিযুদ্ধে হারিয়ে গেছেন, সেই সময়ে জাহানারা ঈমাম ত রেডীও পাকিস্তানের 'আয়নার' উপ্সতাহপিকা ছিলেন, করেছেন কি কেউ মুক্তিযুদ্ধ?
.
আমাদের প্রানাধিক বংগমাতা জননি শেখ হাচিনা ৭১ সালে পাকিদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা নিয়ে পোয়াতি হয়ে পাকিদের আদর যত্নে একটু কু-সন্তান পয়দা করেছেন, উনি কি যুদ্ধ্এর ময়দানে এক বার একটু উকি দিয়ে সাহস দিতে পারে নাই?
.
আমি একটী হরফ মিথ্যা বলি নাই।
.
এদের কেঊ মুক্তিযুদ্ধ করে নাই, এই ভন্ডদের হাতেই আজ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুনতে হয়, এমন জয় বাংলার পোদে বাশ! আজকে এই ভন্ডদের মাঝে আসল মুক্তিযোদ্ধারা হারিয়ে গেছে! তাই বার বার আমরা পরাস্ত হই!
.
{আসল ইতিহাস জানুনঃ শেখ মুজিবকে জন্ম দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আর আওয়ামী লীগকে জন্ম দিয়েছেন মওলানা ভাসানী ১৯৪৯ সালে। ভাসানী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রথম প্রেসিডেন্ট}
|
![]() |
তোমার শত্রুকে হাজার বার সুযোগ দাও যেন সে তোমার বন্ধু হয়,
কিন্তু তোমার বন্ধু কে কোন সুযোগ দিও না যাতে সে তোমার শত্রুতে পরিনত হয় ।
..
------------শেরে খোদা মওলা আলী (আঃ)
If you are the site owner, please renew your premium subscription or contact support.